স্মার্টফোন হ্যাক না হওয়ার ১১ কার্যকরি উপায়


স্মার্টফোন হ্যাক না হওয়ার ১১ কার্যকরি উপায়


আজকে আমরা স্মার্টফোনকে হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচানোর ১১ কার্যকরি উপায়গুলো জানবো। আমারা প্রায় সবাই স্মাটফোন ব্যবহার করে থাকি। আর আমদের স্মার্টফোনের মধ্যে আমাদের অনেক personal Information থাকে।

যেমন ইমেল, ফেসবুক পাসওয়ার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার ইত্যাদি যা আমরা আমাদের মোবাইলে সেভ করে রাখি। অনেক বন্ধুরা আছে যারা ভাবে আমাদের মোবাইল হ্যাক হয় না। তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।

তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক এমন ১১টি পদক্ষেপ যার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার স্মার্টফোনকে হ্যাক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা

সাধারণত স্মার্টফোনে আমরা বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকি।

যেমন ফেসবুক, ইমেইল, ইউটিউব, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি। আর এসব অ্যাকাউন্টে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে। আর যদি এ সকল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যায় তবে আপনার সকল তথ্য হ্যাকার পেয়ে যাবে। আপনার অ্যাকাউন্ট যাতে হ্যাক না হয় সেজন্য আপনাকে আপনার ফোনের সকল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড শক্তিশালী করতে হবে।

আর যদি আপনার পাসওয়ার্ডটি সহজ হয় তাহলে হ্যাকাররা তাদের কম্পিউটার থেকে বিভিন্ন সফটওয়ার এর মাধ্যমে পাসওয়ার্ড চেক করতে করতে পেয়ে যাবে আপনার পাসওয়ার্ড।

আপনার পাসওয়ার্ড যত সম্ভব বড় করতে হবে। আর আপনায় এমন নাম বা নাম্বার পাসওয়ার্ড হিসাবে দিতে হবে যা ডিকশনারিতে নেই।

যেমন Agjghgdfhhf বা *1@2 6 &7$ অথবা Fingure pin বা eyeris পাসওয়ার্ড। পাসওয়ার্ড এর মাঝে মাঝে ফাকা দিতে হবে। যাতে করে আপনার পাসওয়ার্ড কঠিন ও শক্তিশালী হয়ে যাবে। ফলে হ্যাকার তার কম্পিউটারে সার্চ দিয়ে আপনার পাসওয়ার্ড টি খুঁজে না পায় এবং আপনার অ্যাকাউন্ট টি safe/ সুরক্ষিত থাকবে।


স্পাই অ্যাপ ইনস্টল না করা

সবার প্রথমে আমাদের জানতে হবে আমদের কি কি ভুলের কারণে আমাদের স্মার্টফোন হ্যাক হয় বা হতে পারে।

আমরা অনেক সময় অন্য কারো স্মার্টফোন হ্যাক করার জন্য আমদের স্মার্টফোনে spy apps ডাউনলোড করে থাকি। এখানে জানার বিষয় আপনি অন্য কারো স্মার্টফোন হ্যাক করতে পারেন বা না পারেন, আপনার স্মার্টফোন হ্যাক হয়ে যাবে। কারণ যতগুলো হ্যাকিং spy app আছে তার মধ্যে ভাইরাস থাকে যা আপনার সকল তথ্য হ্যাকার এর কাছে পৌঁছে দেয়। যার ফলে হ্যাকার আপনার স্মার্টফোনের সকল তথ্য হ্যাক করে নিতে পারে। তাই আপনি ভুল করেও আপনার স্মার্টফোনে spy ও hacking app গুলো ডাউনলোড করবেন না। তাহলে আপনার স্মার্টফোন হ্যাক হওয়া থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাবে।

ফ্রি WiFiয়ে কানেক্ট না করা

Free Wi-Fiআপনার স্মার্টফোন হ্যাক হওয়ার কারণ হতে পারে। Free wi-fi আপনার কাছে অনেক পছন্দের হতে পারে। কিন্তু এ Free Wi-Fi আপনার স্মার্টফোন হ্যাক করতে পারে।

আপনি হয়তো ভাবছেন কি ভাবে Free Wi-Fi আপনার স্মার্টফোন হ্যাক করবে। অনেক পাবলিক  Wi-Fi আছে যা আপনার স্মার্টফোন এর জন্য নিরাপদ না। এয়ারপোর্ট বা অফিস ইত্যাদি জায়গায় Wi-Fi Free থাকে। যেখান থেকে আপনি Free Wi-Fi চালাতে পারেন। যখন আপনি Free Wi-Fi এর জন্য চেকইন করবেন তখন আপনার লোকেশান সরাসরি হ্যাকারের কাছে চলে যাবে। আপনি যখন Wi-Fi এর জন্য Check in করবেন তখন আপনার ফোনের GPRS অন হয়ে যাবে। যার ফলে আপনার মোবাইল এর সকল তথ্য Wi-Fi-এর রাউটারে চলে যাবে। এবং সহজে হ্যাকার আপনার মোবাইল হ্যাক করে নিতে পারবে। তাই Free Wi-Fi ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন যেন আপনার ফোন হ্যাক না হয়।

অন্যের ডিভাইসে কানেক্ট না করা

আপনি আপনার স্মার্টফোনে অন্য কারো ল্যাপটপ বা পিসির সাথে Connect করলে আপনার স্মার্টফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আপনি অনেক সময় আপনার স্মার্টফোনে বিভিন্ন Program বা সফটওয়্যার বা ফাইল নেবার/দেবার জন্য অন্য ডিভাইস এর সাথে USB এর মাধ্যমে Connect করেন। তখন আপনার স্মার্টফোনের সকল তথ্য Transfer হয়ে যেতে পারে। যদি ডিভাইসটা আপনার হয়ে থাকে তবে কোনো সমস্যা নেই।

আর যদি অন্য কারো ডিভাইস হয়ে থাকে তবে আপনার মোবাইল হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং হ্যাকার চাইলে আপনার ফোনের সকল personal তথ্য হ্যাক করে নিতে পারে। আপনার স্মার্টফোন থেকে transfer করা তথ্যগুলোর মধ্যে তিনটি তথ্য যথেষ্ট আপনার ফোন হ্যাক করার জন্য।

আর তিনটি তথ্য হলোঃ

  • Serial Number
  • File system information
  • Electronic chip

স্মার্টফোন হ্যাক না হওয়ার ১১ কার্যকরি উপায়

অন্যের ডিভাইসে লগিন না করা

আপনি অনেক সময় আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য অ্যাকাউন্টে আপনার বন্ধুদের স্মার্টফোন থেকে লগইন করে থাকেন। যার ফলে অনেক সময় আপানার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড গুলো আপনার বন্ধুর স্মার্টফোনে সেভ হয়ে যেতে পারে। আর আপনার বন্ধু চাইলে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে নিয়ে আপনার সকল ডাটা বা তথ্য নিয়ে নিতে পারে।

আর এ জন্য আপনার অ্যাকাউন্ট অন্য কারো স্মার্টফোনে লগইন করা থেকে বিরত থাকুন। এর ফলে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

কাউকে পিন পাসওয়ার্ড না দেয়া

আপনার স্মার্টফোনের কোনো অ্যাকাউন্ট এর পাসওয়ার্ড বা পিন কোড অন্য কাউকে দিবেন না। আর আপনি যাকে পাসওয়ার্ড দিবেন সে চাইলে আপনার স্মার্টফোনের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে নিতে পারবে। যার ফলে আপনার স্মার্টফোনের সকল তথ্য হ্যাকার হ্যাক করে নিবে। তাই আপনার স্মার্টফোনের অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য অন্য কাউকে আপানার স্মার্টফোনের পাসওয়ার্ড দিবেন না।


অপরিচিত লিংকে ক্লিক না করা

বিভিন্ন সময় আমাদের স্মার্টফোনের ই-মেইল বা মেসেঞ্জারে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে মেসেজ পাঠায় যে, আপনি এতো টাকার লটারি পেয়েছেন এবং টাকা পাওয়ার জন্য আপনাকে এ Link-এ ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনাকে ঐ Link-এ লগইন করতে বলবে।


আর আপনি যদি ঐ Link-এ ক্লিক করে লগইন করেন তবে আপনি তো কোন দিনও টাকা পাবেনেই না বরং আপনার স্মার্টফোনের সকল তথ্য হ্যাক হয়ে যাবে। কারণ ঐ মেসেজটি আপনাকে একজন হ্যাকারই দিবে। আপনার স্মার্টফোন হ্যাকারের কাছে থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এ রকম Link-এ ক্লিক করা থেকে বিরত থাকবেন।

সব সময় Wi-Fi বা Bluetooth চালু না রাখা

আপনি যদি আপনার স্মার্টফোনে Wi-Fi বা Bluetooth অন করে রাখেন তবে আপনার স্মার্টফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

যখন আপনার wi-fi বা Bluetooth অন থাকবে আর আপনার আশেপাশে কোন হ্যাকার থাকে তখন সে আপনার স্মার্টফোনের Wi-Fi বা Bluetooth এর সাথে Connect করে ডাটা Transfer করে আপনার স্মার্টফোনের সকল তথ্য হ্যাক করে নিতে পারে।

এজন্য আপনি আপনার স্মার্টফোনের Wi-Fi বা Bluetooth কখনোই অযথা অন রাখবেন না।

উন্নত মানের সিকিউরিটি অ্যাপ ব্যবহার করা

আমরা সাধারণত ফ্রি Antivirus ব্যবহার করে থাকি। Free Antivirus-গুলো পাওয়ারফুল হয় না। যে কারণে ভাইরাস আমাদের ফোনে প্রবেশ করে।

আর যখন হ্যাকার আপনার ফোনে কোনো আপ্লিকেশন পাঠায় তখন ঐ আপ্লিকেশনের ভাইরাস আপনার স্মার্টফোন থেকে সকল ডাটা হ্যাকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর হ্যাকার খুব সহজে আপনার সকল তথ্য হ্যাক করে নিতে পারে।

তাই আমাদের স্মার্টফোনকে হ্যাক হওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য উন্নতমানের Antivirus ব্যবহার করা উচিত।

ফোন আপডেট দেয়া

আমরা আমদের স্মার্টফোন update অবশ্যই দেব। কারণ Update দেওয়ার ফলে স্মার্ট মোবাইলের সকল আপ্লিকেশন উন্নত হবে এবং স্মার্টফোনের সিকুরিটি শক্তিশালী হবে। যার কারণে আপনার স্মার্টফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং আপনার স্মার্টফোন সুরক্ষিত থাকবে হ্যাকারের কাছে থেকে।

টু স্টেপ ভেরিফিকেশন অন রাখা

আপনার স্মার্টফোনের সকল অ্যাকাউন্টের টু স্টেপ ভেরিফিকেশন অন রাখুন। যেসব অ্যাকাউন্টের টু স্টেপ ভেরিফিকেশন অন করে রাখবেন সেসব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়ে গেলেও আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাকারের কাছ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

আশা করি আপনি যদি আপনার স্মার্টফোন ব্যবহারে এই ১১টি পদক্ষেপ মেনে চলেন তাহলে কোনো দিনও হ্যাকার দ্বারা হ্যাক হবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন





Previous Post Next Post