কিভাবে জন্ম সনদ বাতিল করবেন? জেনেনিন সঠিক নিয়ম-২০২৪

কিভাবে জন্ম সনদ বাতিল করবেন? জেনেনিন সঠিক নিয়ম-২০২৪


আপনি যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে চান, তাহলে আজকের এই লেখাটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য।

একই ব্যক্তির একাধিক অথবা ডুপ্লিকেট অথবা প্রয়োজনীয় ভুল তথ্য থাকলে আপনার জন্ম সনদ বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।

জন্ম সনদ একজন শিশুর জীবনের প্রথম নথিপত্র বা নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট। তাই বর্তমানে এই জন্ম সনদপত্রের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যাপক । তবে কোন কারণে আপনার জন্ম সনদপত্র ডাবল হয়ে থাকলে
সেটিও কিন্তু বর্তমানে বিপদজনক। কারণ একাধিক সরকারি যেকোনো ধরনের ডকুমেন্ট থাকাকে দন্দনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

তাই আপনার জন্ম সনদপত্র দুইটি হয়ে থাকলে বা বাতিল করার প্রয়োজন মনে করে থাকলে আজকের দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে জন্ম সনদ বাতিলের আবেদন করার সঠিক নিয়ম দেখে আবেদন করুন।

সূচীপত্রঃ

জন্ম সনদের এত গুরুত্ব কেন?

জন্মের পর শিশু নাগরিকত্বের নথিপত্র হিসেবে জন্ম সনদ ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জন্ম সনদপত্র প্রয়োজন হচ্ছে এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কারণ।


চাকুরী- বয়স নির্ধারণ –শিক্ষা– পরিচয় –ঠিকানা –ভোটার এই সকল কারণে জন্ম সনদ বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

জন্ম সনদ বাতিল করতে কি কি প্রয়োজন?

একটি জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র বাতিল করতে হলে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে হবে। তা না হলে যে কেউই চাইলে অসৎ ভাবে অন্য কারো জন্ম নিবন্ধন সনদটি বাতিল করতে পারবে। তাই জন্ম সনদ বাতিল আবেদন করতে অবশ্যই উপযুক্ত প্রমাণস্বরূপ নিচের এই ডকুমেন্টস গুলো সঙ্গে থাকতে হবে যেমন–

জন্ম নিবন্ধন সনদ বাতিল করতে অবশ্যই আপনার ১৭ ডিজিটের ডিজিটাল জন্ম সনদ নাম্বার এবং জন্ম সনদে থাকা জন্ম তারিখটি প্রয়োজন হবে। আপনার নামে একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ আছে তার প্রমাণ স্বরূপ যেকোনো ধরনের ডকুমেন্ট অবশ্যই থাকতে হবে। এছাড়াও আপনার নামে একাধিক জন্ম নিবন্ধন আছে তার প্রমাণস্বরূপ জন্ম নিবন্ধক অফিস থেকে আরো প্রয়োজনীয় কিছু প্রমাণ পত্র চাইতে পারে সেজন্য অবশ্যই আপনার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

প্রাথমিকভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র বাতিল আবেদন করতে এই সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার প্রয়োজন হবে।

জন্ম সনদ বাতিল আবেদন ফি কত?

জন্ম সনদ বাতিলের ক্ষেত্রে আপনার জন্ম নিবন্ধকের কার্যালয়ে অবশ্যই আপনার ফি প্রদান করতে হবে। বলে রাখা ভালো যে বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধন অফিসগুলো বিভিন্নভাবে এই ফি পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকে। তবে সরকারিভাবে জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন ফি মাত্র ১০০ টাকা। অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন করার পূর্বে আপনার একাউন্টে ১০০ টাকা থাকতে হবে। যা আপনার জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার প্রয়োজনে ফি প্রদান করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার জন্য একটি সময় অনলাইনে সকল সিস্টেম থেকে থাকলেও বর্তমানে এখন তা বন্ধ আছে। তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন ডুবলিকেট বা একের অধিক থেকে থাকলে এখনো পর্যন্ত ম্যানুয়ালি ভাবে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার জন্য প্রথমে উপরের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো সঙ্গে নিবেন। এবং আপনি যে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভা থেকে জন্ম নিবন্ধনটি সংগ্রহ করেছিলেন সেই ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভায় সরাসরি যাবেন এবং সেখানে গিয়ে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন ডুব্লিকেট বা একের অধিক রয়েছে তা প্রমাণপত্র সহ বিবৃতি দিবেন।

সেখানে অবশ্যই প্রমাণপত্রের সঙ্গে স্ব-শরীরে আপনাকে উপস্থিত থেকে বিবৃতি প্রদান করতে হবে। এরপর জনপ্রশাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে সকল বিষয়গুলো যদি সত্যতা প্রমাণিত হয়। তাহলে আপনাকে জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন ফরম প্রদান করবে। এছাড়াও আপনারা চাইলে অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করার পর তা পূরণ করে সরাসরি নিবন্ধকের কার্যালয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

সুন্দরভাবে আপনি জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন ফরমে থাকা সঠিক তথ্যগুলি দিয়ে পূরণ করবেন। এছাড়াও নিচে আমি আপনাদেরকে দেখিয়ে দিব জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন ফরমটি ডাউনলোড এবং কিভাবে পূরণ করবেন সকল বিষয়।


এরপরে আপনার ফরমের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সকল প্রমাণপত্র সহ আপনার নিকটস্থ জনপ্রশাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের তা জমা দিবেন। তারা আপনার সকল বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আপনারা আবেদন পত্রটি গ্রহণ করে জন্ম এবং মৃত্যু সনদ সাইটে তাদের ইউনিক ইউজার আইডি দিয়ে আপনার জন্ম নিবন্ধন বাতিল করে দিবে।

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ২০২৪ ওয়েবসাইটের সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। তাই এখন জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে আপনাকে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/কাউন্সিলর অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন বাতিলের আবেদন ফরম ডাউনলোড

জন্ম নিবন্ধন বাতিল এর আবেদন ফর্মটি নিচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নিন।
Download form here

জন্ম নিবন্ধন বাতিলের আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে নিকটস্থ যে কোন প্রিন্টারের দোকান থেকে তা প্রিন্ট আউট দিয়ে নিন। অবশ্যই আবেদন ফরমে থাকা প্রয়োজনীয় সকল তথ্যগুলি সঠিকভাবে পূরণ করুন।

জন্ম নিবন্ধন বাতিলের আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম

এখন আমরা আলোচনা করবো জন্ম নিবন্ধন বাতিলের আবেদন ফরমে থাকা যে ইনফরমেশন গুলো রয়েছে এই তথ্যগুলো কিভাবে আপনারা পূরণ করবেন এবং কি কি কাজ করবেন।

জন্ম /মৃত্যু নিবন্ধন নাম্বার – এই ঘরে আপনি আপনার ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি দিন।
জন্ম /মৃত্যু নিবন্ধনের তারিখ – এই ঘরে প্রথমে আপনার জন্ম নিবন্ধনে থাকা জন্ম তারিখ প্রদান করুন। দিন- মাস -বছর এভাবে।
নিবন্ধিত ব্যক্তির নাম – এর জায়গাতে আপনার নাম বসিয়ে দিন।
জন্ম /মৃত্যু তারিখ –এই ঘরে আপনার জন্ম নিবন্ধনে থাকা জন্ম তারিখটি দিন।
ভুল তথ্যের বিবরণ -এখানে তিনটি অপশন বা তিনটি খালি বক্স আপনি পাবেন।

(১) বিদ্যমান তথ্য -এখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন এ বর্তমানে কি ভুল আছে বা আপনি কেন বাতিল করতে চান সেটি লিখুন।
(২) সংশোধনীয় তথ্য -এখানে আপনি কি আপনার জন্ম নিবন্ধনের সংশোধন করতে চান সেটি লিখে দিন।
(৩) সংশোধনের কারণ – এখানে সংক্ষেপে আপনার সংশোধনের কারণ লিখে দিন।

এরপর আপনি সংযুক্তি হিসেবে কি কি প্রমানপত্র বা কাগজপত্র জমা দিচ্ছেন তা
ক) খ) গ) ঘএই ঘরে উল্লেখ করুন ।

এরপর নিচের দিকে আবেদনকারী স্বাক্ষর নাম ও নিবন্ধিত ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক কি এটি আপনি সিল সিগনেচার করে দিন।

“নিবন্ধকের কার্যালয় কর্তৃক পুরুণীয়”

এটি নিবন্ধক ও তৎ কর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তি সকল কিছু পূরণ করে স্বাক্ষর এবং নাম সহ সিল দিয়ে দিবে।

জন্ম নিবন্ধন করা বাতিল করা আবেদন ফরম বা সংশোধনের আবেদন ফরমটি এভাবে আপনারা পূরণ করে নিবেন।

জন্ম সনদ বাতিল সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন উত্তর

অনলাইনে বর্তমানে জন্ম সনদ বাতিল করা যায় কিনা?

বর্তমানে ২০২৪ সালের নতুন জন্ম এবং মৃত্যু সনদ আইন অনুসারে অনলাইনে জন্ম সনদ বাতিল আবেদনটি স্থগিত করা হয়েছে।তবে অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ বাতিলের আবেদন ফরমটি আপনাকে ডাউনলোড করে নিতে হবে।

জন্ম সনদ বাতিল করার নিয়ম কি?

জন্ম সনদ বাতিল করতে আপনি আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন, পৌরসভা অথবা সিটি কর্পোরেশনে জন্ম সনদ বাতিলের আবেদন ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা উপযুক্ত প্রমাণপত্র সহ স্ব-শরীলে দেখা করতে হবে।

জন্ম সনদ বাতিল আবেদন ফি কত?

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জন্ম সনদ বাতিল এর আবেদন ফ্রি মাত্র ১০০ টাকা।

জন্ম সনদ বাতিল কত দিনে হয়?

জন্ম সনদ বাতিল আবেদন করার তিন থেকে পাঁচ কার্য দিবসেই এটি বাতিল করা সম্ভব।

জন্ম সনদ বাতিল কি কি কারণে করা যায়?

একাধিক বা ডুবলিকেট জন্ম সনদ থাকলে বাতিল করা যায়।

জন্ম সনদে মূল তথ্য ভুল থাকলে বাতিল করা যাবে কিনা?

জন্ম সনদপত্রে মূল তথ্য যদি ভুল থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনার জন্ম সনদটি বাতিল করার চেয়ে জন্ম সনদ সংশোধন করাই ভালো।
Previous Post Next Post