কম পড়ে বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পাসের নিঞ্জা টেকনিক

কম পড়ে বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পাসের নিঞ্জা টেকনিক, BCS

আমরা এই পোস্টে  বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার নিঞ্জা টেকনিকগুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে  আলোচনা করেছি। তাই আপনারা যারা বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিবেন বা আগে দিয়েছেন কিন্তু ভালো রেজাল্ট করতে পারেন নি তাদের জন্য এই পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

সামনেই যেহেতু বিসিএস পরীক্ষা সেহেতু যারা বিসিএস পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুকে এবং ইতিমধ্যে প্রিপারেশন শুরু করে দিয়েছেন। তো তাদের জন্য আজকের বিসিএস ক্যাডার প্রিলিমিনারি পরীক্ষার টেকনিক।


সূচিপত্রঃ

  • বিসিএস মানে কি?
  • ক্যাডার মানে কি?
  • যে যে বিষয় গুরুত্ব দিলে বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা যায়
  • প্রথম বারেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার উপায়
  • বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার টেকনিক এবং কিছু পরামর্শ
  • বিসিএস পরীক্ষার হলে যা যা করবেন না
  • শেষ কথাঃ

বিসিএস মানে কি?

“বিসিএস” এর পুরো অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। আর বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে এই সিভিল সার্ভিসের জন্য যে পরীক্ষা দেওয়া হয় সেটা।

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে সিভিল সার্ভিস জিনিসটা কি?

“সিভিল সার্ভিস” হচ্ছে সরকারি চাকুরি। যে কোন দেশে সরকারি চাকুরিকে দুই ভাগে বিভক্ত হয় যথাঃ
  • মিলিটারি
  • সিভিল মিলিটারি
“সিভিল মিলিটারি” বলতে আর্মি, নেভি, এয়ার ফর্স সহ যে সকল ডিফেন্স আছে সেগুলোকে বোঝায়।

আর “সিভিল সার্ভিস” বলতে প্রশাসন মানে যারা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলার ডিসি, মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা, পুলিশ ট্যাক্স, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাস্টমস ইত্যাদি সহ মোট ২৭ টি সার্ভিস কে বোঝায়।

ক্যাডার মানে কি?

“ক্যাডার” মানে হচ্ছে কোনো সুনির্দিষ্ট কাজ করার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দলকে বুঝায়।

যাদের সরকারি চাকরির সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগ প্রাপ্তদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়। তাই এদের সিভিল সার্ভিস ক্যাডার বা বিসিএস ক্যাডার বলা হয়।

যে যে বিষয় গুরুত্ব দিলে বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা যায়

বিসিএস পরীক্ষার পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে থেকে আপনাকে বিসিএস পরীক্ষার প্রিপারেশন নিতে হবে।
এই প্রিপারেশন এর মধ্যে কোন রকম ফাঁকি দেওয়া চলবে না। আপনি যদি মনে করে থাকেন আপনি হাসলেন দেখলেন এবং জয় করে নিলেন। এমনটা করলে কখনোই আপনি ভালো করতে পারবেন না। তাই বিষয়টাকে এমনভাবে গড়তে হবে যে, আপনি আসলেন প্রচুর পরিমানে পড়াশোনা করলেন এবং আপনার কাছে জয় ধরা দিবেই।


আপনাকে এমনভাবে পড়তে হবে যে আপনার কনফিডেন্স লেবেল হাই থাকবে যে আপনার প্রশ্ন যাই আসুক না কেন আপনি সবই পারবেন। যদি প্রশ্নের ভুল না থাকে তাহলে আপনি ২০ এ ২০ পাবেন। অন্ধের মত পরিশ্রম করলে হবে না আপনাকে এটা উপলব্ধি করতে হবে যে আপনি কি করছেন এবং কি করতে চান। এর জন্য পড়াশোনার মধ্যে আপনাকে প্ল্যানিং করে পড়াশোনা করতে হবে। আপনি কোন বিষয়টা কতটুকু পারবেন বা কতটুকু পড়বেন এ বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হবে। পরীক্ষায় বইয়ের যেখান থেকে আসুক না কেন আপনি লিখতে পারবেন এমন কনফিডেন্স আপনার থাকতেই হবে। আপনার কোথায় ভুল হবে না এবং কোন গুলো ভুল হবে এগুলো আপনাকে নিজে নিজেই ধরতে হবে। এবং আপনাকে বিসিএস পরীক্ষার জন্য বিশেষ করে সাধারণ জ্ঞান প্রচুর পরিমাণে জানতে হবে। এর জন্য আপনাকে নিয়মিত নিউজ পেপার, বিভিন্ন ওয়েবসাইট খবর ইত্যাদি নিয়মিত দেখতে হবে।

এর আগে অনেকেই বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করেছে তাই আপনার কনফিডেন্স হাই রাখতে হবে যে আপনিও ভালো করতে পারবেন। এই কথাটি মনে রাখবেন, একটা মানুষ আগে যা করেছে আরেকটি মানুষ ওই কাজ আবারও করতে পারে। সাধারণ জ্ঞান জানার জন্য আপনাকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, বাংলাদেশ অ্যাফেয়ার্স এগুলো প্রচুর পরিমাণে পড়তে হবে।

প্রথম বারেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার উপায়

আপনারা যারা এখন অনার্স এ পড়াশোনা করছেন আপনাদের এখনই সময় জীবনের একটি লক্ষ্য নির্ধারিত করা। যে আপনি ভবিষ্যতে গিয়ে কি করতে চান? এ বিষয়ে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া। আপনারা যারা এই পোস্টটি পড়ছেন তাদের সকলেরই জীবনের লক্ষ্য হলো ভালো একটি চাকরি করা বা ভালো ব্যবসা করা অথবা একজন বিসিএস ক্যাডার হওয়া।

আপনি যদি আপনার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চান তাহলে আপনাকে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। আর এখন অধিকাংশ মানুষেরই সঠিক পরিকল্পনা থাকে না। আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা না করেন যে ভবিষ্যতে কি করবেন তাহলে আপনার পক্ষে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই বিসিএস ক্যাডার হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই সঠিক এবং মজবুত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

পরিকল্পনা করতে হবে যে কোন বই দিয়ে পড়বেন কোন কোন সময় কতক্ষণ পড়বেন। দিনে রাতে কতক্ষণ পরবেন ইত্যাদি বিষয়ে আপনাকে পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পনা না থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো কখনো সম্ভব নয়।


বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভালো করার টেকনিক এবং কিছু পরামর্শ

সময় এর ব্যবহার

যারা এ পর্যন্ত বিসিএস ক্যাডার হয়ে গেছে তারা সবাই সময়ের উপযুক্ত ব্যবহার করেছে। আপনি যদি চাকুরিজীবী না হন তাহলে আপনাকে দিন রাতে ১৪ ঘন্টা প্লাস পড়াশোনা করতে হবে। আরাম আয়েশ করে ঘরে শুয়ে থাকবেন আর আপনি এমনি এমনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাবেন এই চিন্তা করা বোকামি। পারলে ১৬ ঘন্টা পড়াশোনা করতে হবে। যারা চাকরি করে তাদের আগে থেকেই অনেক পড়াশোনা থাকে। তাদের জন্য ৬ ঘন্টা প্লাস পড়াশোনা করতে হবে।


আর পড়াশোনার সময়টা ঠিক করতে হবে। এর জন্য আপনি সকালের সময়টা কাজে লাগাতে পারেন। কারণ সকালের সময়টা যারা কাজে লাগায় তারা কখনো ব্যর্থ হয় না। আপনি যদি ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা শুরু করেন আটটা পর্যন্ত পড়াশোনা করেন চার ঘন্টা ৪ ঘন্টা পড়াশোনা করলে আপনার পড়াশোনা অনেক কাজে দেবে।

কিন্তু এই সময়ে অনেক পড়াশোনা করতে হবে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে তাই নিজের শরীরের যত্ন নিতে হবে। নিয়মিত দুইটি করে ডিম খেতে হবে। দুধ খেতে হবে এবং তার সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। এবং সময়মত খাবার খেতে হবে। পড়ার মাঝে মাঝে ব্রেক দিতে হবে এবং পড়াটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে তাহলে ওই পড়াটা মনে থাকবে। এবং যেটা করবেন সেটা বারবার রিভিশন দিতে হবে।

বিসিএস পরীক্ষার হলে যা যা করবেন না

পরীক্ষা সাধারণত প্রতিটি বিভাগে হয়ে থাকে। যদি জনবহুল কোন বিভাগের পরীক্ষা হয় তাহলে পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে আপনাকে পরীক্ষার হলে উপস্থিত হতে হবে। এবং সেখানে গিয়ে অনেক বেশি টেনশন এবং পড়াশোনা করা যাবে না। আপনার যেগুলো জরুরী কাজ (প্রাকৃতিক ডাক) পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই সেরে ফেলতে হবে। প্রশ্ন পাওয়ার সাথে সাথে আপনার যেগুলো স্ট্রং দিক রয়েছে সেগুলো আগে দাগিয়ে ফেলতে হবে। প্রশ্নের উপরে যদি গণিত থাকে তাহলে গণিত টা পড়ে লেখার চেষ্টা করবেন। তাই আগে অন্যান্য প্রশ্নগুলো দাগিয়ে নেবেন তাহলে ১ ঘন্টা ২০,৩০ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে পারলে শেষে ধীরেসুস্থে গণিত উত্তর করতে পারবেন।

শেষ কথাঃ

সব কথার শেষ করা হলো আপনি যদি নিয়মিত পড়াশোনা করে থাকেন। এবং জীবনের শক্ত পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে আপনার জীবনে সফলতা আসবেই।
Previous Post Next Post